ভ্যাকসিন নিরাপদ, অযথা ভয় পাবেন না : মোদি
ভারতে ভ্যাকসিন নিতে অনাগ্রহ দেখা যাচ্ছে। মুখ ফিরিয়ে চিকিৎসকদের একটি বড় অংশ। এই পরিস্থিতিতে ভ্যাকসিন নেওয়ার হার বাড়াতে উৎসাহ দিচ্ছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শনিবার ভিডিও কনফারেন্সে বলেন, বিজ্ঞানীদের সবুজ সঙ্কেত পাওয়ার পরেই প্রতিষেধক বাজারে ছাড়া হয়েছে। তাই ভ্যকসিন নিতে অযথা ভয় পাওয়ার দরকার নেই।
যদিও শনিবারো ফের প্রতিষেধক নেওয়ার পরে মৃত্যুর ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। তা নিয়ে সরকারি ভাবে মুখ খোলেনি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়।
শনিবার থেকে প্রতিদিন তিন লাখ মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা এক দিনও ছোঁয়া যায়নি। গোটা দেশে আজ ২ লাখ ২৮ হাজার ৫৬৩ জন ভ্যকসিন নিয়েছেন। ফলে গত সাত দিনে ভ্যাকসিন নিলেন মোট ১২ লাখ ৭২ হাজার ৯৭ জন। শনিবার ২৬৭ জনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এসেছে মৃত্যুর খবরও।
গত শনিবার গুরুগ্রামে ৫৬ বছর বয়সি এক ব্যক্তি কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন। আজ সকালে ঘুমের মধ্যে তিনি মারা যান। মৃত্যুর সাথে ভ্যাকসিনের সম্পর্ক আছে কি না, ময়নাতদন্তের আগে তা নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ স্বাস্থ্যকর্তারা। তবে এই ঘটনার বিরূপ প্রভাবের আশঙ্কা করছেন তারা।
ভ্যাকসিন নিয়ে নেতিবাচক ধ্যান-ধারণা কাটানোর চেষ্টা প্রধানমন্ত্রী। ভ্যকসিন নিয়েছেন, বারাণসীর এমন পাঁচ জন চিকিৎসক, মেট্রন, আশা কর্মীর সাথে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেন তিনি। পাঁচ জনই দেশের অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতিষেধক নিতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
এর আগে শুক্রবার ন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন অভিযোগ করেছিলেন যে, ক্ষুদ্র রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে গিয়ে দেশের মানুষকে ভুল বোঝানো হচ্ছে। আজ বিরোধীদের উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভ্যাকসিন কেন আসছে না, সেই প্রশ্ন তুলে প্রথমে চাপ দেওয়া হচ্ছিল। সরকার প্রথম থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, ভ্যাকসিনের ব্যাপারে বিজ্ঞানী তথা বিশেষজ্ঞদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। তারা যা বলবেন, সেই পথেই এগোনো হবে। সেটাই করা হয়েছে।’
করোনার প্রতিষেধক নিয়ে ভয় ও ভুল ধারণা ভেঙে বেরিয়ে আসার জন্য আজ নিজের বক্তৃতায় স্বাস্থ্যকর্মীদের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। পাঁচ স্বাস্থ্যকর্মীর উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, “যখন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা কোনও প্রতিষেধককে ক্লিনচিট দেন, তখন তা জনমানসে ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে দেয়।”
কোভ্যাক্সিনের নির্মাতা ভারত বায়োটেকের বিরুদ্ধে অন্যতম অভিযোগ ছিল যে, তাদের গবেষণা কোনও আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়নি। চলতি সপ্তাহেই কোভ্যাক্সিনের গবেষণা সংক্রান্ত একটি প্রবন্ধ আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বিষয়ক জার্নাল ল্যানসেটে প্রকাশিত হয়েছে।
ব্রিটিশ ওই জার্নালে কোভ্যাক্সিনের প্রথম দফার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের রিপোর্টের ভিত্তিতে বলা হয়েছে, ৩৭৫ জন স্বেচ্ছাসেবককে ওই প্রতিষেধক দেওয়ার পরেও তাদের শরীরে কোনও নেতিবাচক প্রভাব দেখা যায়নি। বরং করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
স্বাস্থ্যকর্তাদের আশা, ল্যানসেটের ওই রিপোর্টের পরে কোভ্যাক্সিন নিয়ে সংশয় অনেকটাই কেটে যাবে। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা