পরকীয়া দেখে ফেলায় ৩ সন্তানকে গলা কেটে হত্যাচেষ্টা মায়ের

পরকীয়া দেখে ফেলায় ৩ সন্তানকে গলা কেটে হত্যাচেষ্টা
ফাইল ছবি

ঢাকার ধামরাইয়ে পরকীয়া দেখে ফেলায় তিন সন্তানকে বঁটি দিয়ে গলা কেটে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে এক মায়ের বিরুদ্ধে।

শুক্রবার দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার সুয়াপুর ইউনিয়নের কুটিরচর গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে।

এদিকে শনিবার প্রবাসীর স্বামী দেশে ফিরে তার স্ত্রীকে পাথর দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে শাসন করেন। এতে ওই নারী গুরুতর আহত হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার হাসপাতাল থেকেও ওই নারী নিরুদ্দেশ হয়েছে বলে জানান তার প্রবাসী স্বামী আনোয়ার হোসেন।

প্রতিবেশীরা জানান, প্রবাসী মো. আনোয়ার হোসেন সংসারের অভাব ঘোচাতে ২০২০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি কাতার যান। রেখে যান স্ত্রী, দুই ছেলে আবির হোসেন (১২), আরী হোসেন মিতু (১০) ও মেয়ে আমেনা আক্তারকে (১০)।

এদিকে ওই প্রবাসীর স্ত্রী মানিকগঞ্জের সদর থানার বাররারচর গ্রামের মো. রাশেদুল ইসলাম নামে দুবাই ফেরত এক যুবকের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। রাশেদুলকে ধর্ম ভাই পরিচয় দিয়ে মাঝে মধ্যেই নিজের শয়নকক্ষে রাতযাপন করেন। বিষয়টি প্রতিবেশীদেরও দৃষ্টিগোচর হয়।

শুক্রবার দিবাগত রাত ২টার দিকে প্রবাসীর স্ত্রী ও দুবাই ফেরত ওই যুবককে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলে তার তিন সন্তান।

বিষয়টি প্রবাসী স্বামী জেনে যাওয়ার ভয়ে তিন সন্তানকে ধরে বঁটি দিয়ে গলা কেটে হত্যাচেষ্টা করেন তাদের মা।

এ সময় ওই তিন সন্তান বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে এগিয়ে এসে তাদের রক্ষা করে।

এদিকে গত শনিবার বাড়িতে ফেরেন তার কাতার প্রবাসী স্বামী আনোয়ার হোসেন। এর পর তিন সন্তান ও প্রতিবেশীরা তাকে বিষয়টি জানান।  

ঘটনাটি সহ্য করতে না পেরে প্রবাসী স্বামী তার স্ত্রীকে পাথর ছুড়ে উপর্যুপরি আঘাত করে শাসন করেন। এতে ওই নারী গুরুতর আহত হন।

পরে তাকে ধামরাই সরকারি আবাসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর পর ওই পরকীয়া প্রেমিক প্রবাসীর স্ত্রীকে ভাগিয়ে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন।

বিষয়টি জানাজানি হলে সোমবার ওই হাসপাতাল থেকেও ওই প্রবাসীর স্ত্রী নিরুদ্দেশ হয়ে যায় বলে যুগান্তরকে জানান ওই গৃহবধূর স্বামী আনোয়ার হোসেন। এ ব্যাপারে তিনি ধামরাই থানায় একটি অভিযোগ দায়ের ও সাংবাদিকদের কাছে ভিডিও সাক্ষাৎকার দিয়েছেন।

ওই তিন সন্তান জানায়, আমরা মাকে আগে খুব ভালো জানতাম। নিজ চোখে যা দেখতে হলো তাতে পৃথিবীর আর কোনো সন্তানই মাকে এভাবে বিশ্বাস করতে ও ভালোবাসতে পারবে না। এরা মা নামের কলঙ্ক। তাদের এখনও আতঙ্ক কাটেনি। কথা বলতে বলতে আঁতকে উঠতে দেখা গেছে তিন শিশুকে।

প্রবাসী আনোয়ার বলেন, স্ত্রী-সন্তানের সুখের জন্য বিদেশে গিয়েছিলাম। আমার এতবড় সর্বনাশ হবে জানলে কখনও বিদেশে যেতাম না। যার সুখের কথা ভেবে বিদেশে গেলাম, আর সেই আমার বিশ্বাসের ঘরে করল ডাকাতি।

ধামরাই উপজেলা সরকারি হাসপাতালের উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচও) ডা. নুর রিফফাত আরা ওই প্রবাসীর স্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, চিকিৎসাসেবায় আমাদের মোটেও কোনো ত্রুটি বা গাফিলাতি ছিল না। আমাদের এ হাসপাতালটিতে অনেক উন্নত ও মানসম্মত চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয়ে থাকে। ওই গৃহবধূ তার নিজের ইচ্ছাতেই চলে গেছেন।

এ ব্যাপারে তদন্তকারী কর্মকর্তা আব্দুস সালাম বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি গভীরভাবে তদন্তসাপেক্ষে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মামলা তদন্তের স্বার্থে এ ব্যাপারে আপাতত কোনো তথ্য প্রদান করা যাবে না। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।

এ ব্যাপারে প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তিনি জানান, আমার স্বামী মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমার ওপর অমানসিক নির্যাতন করেছে। আমি এখনও অনেক অসুস্থ। তাই বেশি কথা বলতে পারছি না। আমি সুস্থ হয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নেব।

Copyfrom: jugantor

Author

ask

Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

Previous Post Next Post