কামরান চত্বর -এর সাইনবোর্ড গায়েব | Kamran Square signboard missing

কামরান চত্বর’-এর সাইনবোর্ড গায়েব



সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের নামে নগরের বন্দরবাজারে ‘কামরান চত্বর’ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসসিক)। তবে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে এখনও পাঠানো হয়নি। উল্টো নামকরণের ছয় মাসের মাথায় সিটি পয়েন্টে সাঁটানো ‘জনতার কামরান চত্বর’ লেখা বোর্ডটি গায়েব হয়ে গেছে!

গত বছরের ১৫ জুন সাবেক মেয়র কামরান কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এরপর জুলাই মাসে সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) নিয়মিত মাসিক সভায় নগর ভবনের সামনের চত্বরটির নাম রাখা হয়েছিল ‘জনতার কামরান চত্বর’। কামরান তৎকালীন সিলেট পৌরসভার সর্বকনিষ্ঠ কমিশনার ও চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে সবশেষে সিসিকের প্রথম মেয়র নির্বাচিত হন।

তবে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর দাবি, সাবেক মেয়র কামরানের নামে চত্বরের নামকরণ সংক্রান্ত সভার সিদ্ধান্ত এরই মধ্যে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এ বিষয়টির অর্থ এলে মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা। সিসিকের মাসিক সভার সিদ্ধান্তের পর থেকে স্থানটিকে কামরান চত্বর নামেই অভিহিত করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সেই সভার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

গত বছরের ২৭ জুলাই দুপুরে আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সিটি পয়েন্টে এসে স্থানটিকে ‘জনতার কামরান চত্বর’ ঘোষণা করে সাইনবোর্ড সাঁটিয়ে দেন। একটি বেসরকারি ব্যাংকের অর্থায়নে চত্বরটি নির্মাণ করা হয়েছিল। ২৬ জুলাই রাতে স্থানটিকে ‘নগর চত্বর’ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিল সিসিক। তার পরদিনই আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা জননন্দিত নেতা কামরানের নামে চত্বরটির নামকরণের দাবি জানিয়ে বোর্ড সাঁটিয়ে দেন।

এ উদ্যোগে একাত্মতা জানান সিসিকের দুই কাউন্সিলর মহানগর আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির যুগ্ম সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আফতাব হোসেন খান। সিসিকের মাসিক সভায় নগর ভবনের সামনের চত্বরের নামকরণ কামরানের নামে করার দাবি জানান তারা। অনেকের আশঙ্কা ছিল, পরদিন ২৮ জুলাই সিসিকের মাসিক সভায় এ প্রস্তাব তোলা হলে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এতে আপত্তি জানাতে পারেন।

তবে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মেয়র আরিফ সবাইকে অবাক করে সিসিকের মাসিক সভায় নিজেই কামরানের নামে চত্বর করার প্রস্তাব দেন এবং প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। নিয়মানুযায়ী সভার সিদ্ধান্ত রেজ্যুলেশন আকারে স্থানীয় সরকার বিভাগে অনুমোদনের জন্য পাঠানোর কথা ছিল। কিন্তু অভিযোগ, তা এখনও পাঠানো হয়নি। কাউন্সিলরসহ সংশ্নিষ্টরাও সেই সভার রেজ্যুলেশনের কপি পাননি।

এ প্রসঙ্গে নগরীর ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ বলেন, জননন্দিত সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের নামে চত্বর করার দাবি পুরো নগরবাসীর। কিন্তু সিসিক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও আশ্চর্যজনকভাবে তা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি।

উল্লেখ্য, সাবেক মেয়র কামরানের মৃত্যুর পর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন প্রথম তার নামে চত্বর করার প্রস্তাব করেন। একটি ওয়েবিনারে তিনি এ প্রস্তাব করার পর আওয়ামী লীগসহ প্রগতিশীল এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা তাতে সমর্থন জানান।

এদিকে কামরানের নামে চত্বর করার সিদ্ধান্তের পর সাবেক পৌর চেয়ারম্যান ও জাতীয় পার্টির নেতা বাবরুল হোসেন বাবুল ও প্রয়াত বিএনপি নেতা আ ফ ম কামালের নামে চত্বর করার দাবিতে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। কামরানের নামে চত্বরের নামকরণ ঠেকাতে হঠাৎ এসব দাবি তোলা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিভিন্নজন।

Author

ask

Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

Previous Post Next Post