রাজশাহীতে রেলওয়ের এক কর্মকর্তাকে বাসায় দাওয়াত দিয়ে ডেকেছিলেন দুই নারী ও এক যুবক। তারপর ওই কর্মকর্তাকে নগ্ন করে তোলা হয়েছিল ছবি। ধারণ করা হয়েছিল ভিডিও চিত্র। ওই দৃশ্য ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে দাবি করেছিলেন ১০ লাখ টাকা। পরে অভিযোগ পেয়ে রোববার ফিটিং চক্রের দুই নারীসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতার তিনজন হলেন নগরীর উপশহর এলাকার আবদুর রহিমের মেয়ে সাবিনা ওরফে রজনী (২৫), নগরীর বড়বনগ্রাম ফুলতলা এলাকার আবদুর রশিদের ছেলে আবদুল গাফফার (৩০) ও নামোভদ্রা এলাকার রিয়াজ উদ্দিনের মেয়ে রিয়া আক্তার পাখি (১৯)। পুলিশ বলছে, এরা একটি ফিটিং চক্রের সদস্য, ফাঁদে ফেলে বাসায় ডেকে ব্ল্যাকমেইল করাই ছিল তাদের পেশা।
নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ জানায়, সাবিনা মাঝে মধ্যে ট্রেনে ঢাকায় যাতায়াত করতেন। সেই সুবাদে ওই রেল কর্মকর্তার সাথে তার পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্র ধরে সাবিনা তাকে নিজের বাড়িতে দাওয়াত দেন। শনিবার সন্ধ্যার পর ওই কর্মকর্তা তার বাড়িতে যান। এ সময় সাবিনা তাকে চা পান করতে দেন। এরই মধ্যে সেখানে রিয়া ও গাফফার যান। তারা ওই রেল কর্মকর্তাকে জোরপূর্বক নগ্ন করে ছবি তোলা শুরু করেন। ভিডিও চিত্রও ধারণ করেন। ওই ভিডিওচিত্র ইন্টারনেটে ছেড়ে দিয়ে ভাইরাল করার ভয় দেখিয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।
কিন্ত ওই কর্মকর্তা জানান, তার কাছে ১০ লাখ টাকা নেই। এ সময় ওই তিনজন তার কাছে থাকা একটি স্বর্ণের আংটি কেড়ে নেন এবং নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে নেন। এরপর বাইরে এসে বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা নেন তারা। এ ঘটনায় রাতেই বোয়ালিয়া থানায় অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী। এরপর রোববার সকালে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে নগদ আট হাজার টাকা, ৩৫ হাজার টাকা মূল্যের স্বর্ণের আংটি, স্বাক্ষরিত নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্প এবং তাদের মুঠোফোন থেকে ভুক্তভোগী রেল কর্মকর্তার নগ্ন ছবি ও ভিডিও জব্দ করা হয়।
এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিবারন চন্দ্র বর্মন জানান, এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী থানায় একটি মামলা করেছেন। ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তিনজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তারা আর কার কার সাথে এ ধরনের ব্ল্যাকমেইলের ঘটনা ঘটিয়েছেন তা জানতে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলেও জানান তিনি।