‘চট্টগ্রামে ভোট ডাকাতি নিয়ে কথা বলায় এখন আমি অর্বাচীন বালক। মানে হচ্ছে আমি অবুঝ বালক। কিন্তু আপনি নিজেকে ত্যাগী নেতা দাবি করেছেন। ৬৪ বছর রাজনীতি করে ত্যাগী নেতা হয়ে কেন ভোট ডাকাতি করতে গেলেন? এটা আপনার কাছে আমার প্রশ্ন।’
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর ভাই আবদুল কাদের মির্জা সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লাইভে এসে চট্টগ্রামের নবনির্বাচিত মেয়রের উদ্দেশে এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের নেতা ওবায়দুল কাদের সাহেব আমাকে বলেছেন, তুমি এলাকার বাইরে কারো বিরুদ্ধে কথা বলবে না। নির্বাচন নিয়ে কথা বলবে না। আমি ওনার কথা মেনে নিয়েছি। আমি বলেছি, আমি এক মাস দেখব, যদি কোনো পরিবর্তন না হয় তখন আমি কথা বলব। দুঃখজনক হলেও সত্য চট্টগ্রামের মেয়র আমাকে বলেছে অর্বাচীন বালক। কিন্তু তিনি নিজেকে ত্যাগী নেতা দাবি করেও কেন মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করলেন?’
লাইভে এসে কাদের মির্জা চট্টগ্রামের নবনির্বচিত মেয়রের উদ্দেশে আরো বলেন, ‘আপনি এতো বড় নেতা, প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আগে আপনার নামও শুনিনি। কথা বলার আগে চিন্তা করে বলবেন। যদি নিজেকে অভিজ্ঞ ও ত্যাগী মনে করেন তাহলে ভাষাজ্ঞান রেখে কথা বলবেন। এই অবুঝ বালকটা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গত ১৬ জানুয়ারি বসুরহাট নির্বাচনে কাস্টিং ভোটে ৭৭ ভাগ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছে। এটা আপনাকে স্মরণ করে দিতে চাই।’
আওয়ামী লীগের নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমাকে কথা বন্ধ করতে বলেন। তাহলে এরা কিভাবে কথা বলে! এই সাহস কোথা থেকে পায়! তারা বলতে পারবে কিন্তু আমি বলতে পারবে না। আমিও এদেশের নাগরিক।’
তিনি দলের গঠনতন্ত্র উল্লেখ করে বলেন, ‘আমার দলের ঘোষণাপত্রে আছে মত প্রকাশের স্বাধীনতার কথা। ওনারা বলতে পারলে আমি কেন পারব না? আমি রক্তচক্ষুকে ভয় করি না। আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, রক্তচক্ষু দেখাবেন না। চেষ্টা করবেন না। আজ সংবাদ মাধ্যমগুলোতে আমার কোনো কথা যাতে মানুষের কাছে না যেতে পারে সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’
আবদুল কাদের মির্জা আরো বলেন, ‘আমি মনে করি, সাংবাদিকরা দেশপ্রেমিক। তারা সাহস করে সত্য কথা লিখে। আমি তাদের জাতির বিবেক বলি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য আজকে কিছু কিছু সংবাদ মাধ্যমের কর্মকাণ্ড দেখে সাংবাদিকরা তাদের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হচ্ছে। গতকাল বাংলাদেশের জনপ্রিয় চ্যানেল ‘চ্যানেল আই’-এর টু দ্যা পয়েন্টে শোতে যুক্ত হই। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য আমাকে অনুষ্ঠানের মাঝপথে বের করে দেয়া হয়েছে। ডিবিসি’র অনুষ্ঠান রাজকাহনে আমাকে যুক্ত করার কথা ছিল। হঠাৎ করে সকাল বেলায় বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আজকে টেলিভিশন চ্যানেলগুলো বা সংবাদপত্রগুলো কার হাতে বন্দী? কার নির্দেশে চলে? এ অবস্থা কি চলতে দেয়া যায়? আমি সাংবাদিক ভাইদের বিবেকের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই, আপনারা যদি বন্দী থাকেন তাহলে সত্য কথাটা কে বলবে? আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’