চেয়ারম্যানকে ৫০ হাজার টাকা দিয়েও সরকারি ঘর না পেয়ে নারীর আত্মহত্যা! | Women commit suicide without getting government houses even if they pay the chairman Rs 50,000!


দীর্ঘ চার বছর ধরে চেয়ারম্যানের কাছে সরকারি বরাদ্দকৃত ঘরের জন্য ঘুরেছেন নাজমা (৫৫)। ঘরের জন্য দেড় বছর আগে চেয়ারম্যানকে ৫০ হাজার টাকাও দিয়েছেন তিনি। কিন্তু সেই কাঙ্ক্ষিত ঘর না পেয়ে চেয়ারম্যানকে আত্মহত্যার হুমকি দেন। চেয়ারম্যান হুমকি আমলে না নিলেও মনোকষ্টে সত্যিই আত্মহত্যা করলেন ওই নারী।

গুচ্ছগ্রামের রজবের স্ত্রী ও নুরে আলমের মা নাজমা মঙ্গলবার বিকাল ৫টায় বিষপান করে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে। বিষপানের পর তাকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ঢাকা মিটফোর্ড হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা দেন।

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তালেবের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ করেছেন মৃতের পরিবার ও স্থানীয়রা।

ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, সাবেক ৩ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার আব্দুর রশিদের মাধ্যমে গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু তালেবকে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন ওই নারী। কিন্তু চার বছরে এ বিষয়ে গজারিয়ার প্রশাসনের সকলের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোনো বিচার পাননি তিনি।

নাজমা মঙ্গলবার সকাল ১১টায় গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে চেয়ারম্যান আবু তালেবকে হুমকি দিয়ে আসেন দুপুরের মধ্যে ৫০ হাজার টাকা ফেরত না দিলে তিনি আত্মহত্যা করবেন। পরে চেয়ারম্যান তার টাকা ফেরত না দিলে বিষপান করেন তিনি। এতে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে দ্রুত ঢাকা মিডফোর্ট হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে ওই ওয়ার্ড মেম্বারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

তবে গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো: আবু তালেব মোবাইল ফোনে বলেছেন, ‘আমি ওই নারীর কাছ থেকে কোনো টাকা নেইনি এবং তিনি আমাকে কোনো টাকা দেননি। শুনেছি মা-ছেলের ঝগড়ায় তিনি আত্মহত্যা করেছেন। তবে গত সোমবার তিনি আমার কাছে এসেছিলেন। আমার সাথে ঘরের জন্য ঝগড়াও করে গিয়েছিলেন তিনি।’

গুচ্ছগ্রামের মোজাম্মেল জানান, ‘শুনেছি ঘরের জন্য ওয়ার্ডের মেম্বার রশিদের মাধ্যমে দেড় বছর আগে তিনি চেয়ারম্যানকে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। চেয়ারম্যান সাহেব নাজমাকে ফোন করে ৫০ হাজার টাকা চেয়েছিলেন। বিষয়টি স্থানীয় সবাইকে আত্মহত্যার আগে তিনি জানিয়েছিলেন।’

উপজেলা পিআইও তাজুল ইসলাম জানান, ‘নাজমা একাধিকবার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম ইমাম রাজী টুলু ও আমার কাছে সরকারি বরাদ্দকৃত ঘর পাওয়ার জন্য এসেছিলেন।’

এস এম ইমাম রাজী টুলু বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘এটি খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। ঘরের ব্যাপারে তিনি আমার কাছে একাধিকবার এসেছেন কিন্তু আমি কিছুই করতে পারিনি।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জিয়াউল হক চৌধুরী জানান, ‘আত্মহত্যার বিষয়টি জেনেছি। তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

তবে এ ব্যাপারে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ রইছ উদ্দিনের সরকারি ফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

Author

ask

Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

Previous Post Next Post