বাবা বার্সেলোনার তারকা হলেও মাতেও বার্সেলোনার সমর্থক নয়। আর সেটা বড় ভাই (মেসির বড় ছেলে) থিয়াগো মেসির কারণেই। চার বছরের মাতেওর এমন আচরণ অবশ্য নতুন কিছু নয়। পরিবারের সবাই বার্সেলোনাপ্রেমী হলেও মাতেও বার্সেলোনার শুভানুধ্যায়ী নয়। এর আগেও মেসি জানিয়েছেন, তাঁর দ্বিতীয় পুত্র মাতেও বার্সেলোনার হার দেখতে পছন্দ করে। গত জুনে টিওয়াইসি স্পোর্টসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ নিয়ে কথা বলেছেন মেসি। বড় ভাই থিয়াগো বার্সেলোনার সমর্থক, তাই ভাইকে খ্যাপাতে রিয়াল গোল করলে মাতেও উদ্যাপন করে। কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হয়তো মাতেও-ও বুঝছে, রিয়াল নয়, বার্সাকেই সঁপতে হবে মনপ্রাণ। পাঁচ বছর বয়সী মাতেও তাই গত রাতে বাবার গোলের পর খ্যাপাটে উদ্যাপন করেছে। গর্বিত মা আন্তোনেল্লা রোকুজ্জো আবার সে মাহেন্দ্রক্ষণটা ক্যামেরাবন্দী করে প্রকাশ করেছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে।
করোনাভাইরাসের কারণে স্বাভাবিকভাবেই মাঠে গিয়ে খেলা দেখা হয় না মেসি পরিবারের। তাই টেলিভিশনই ভরসা। আন্তোনেল্লার সেই ভিডিওতে দেখা গেল, মেসির বাসায় টিভিতে চলছে বার্সেলোনা-গ্রানাদা ম্যাচটি। প্রথমার্ধের ঠিক শেষ দিকে ফ্রি-কিক পায় বার্সেলোনা। গুটি গুটি পায়ে সে ফ্রি-কিকটা নিতে আসেন লিওনেল মেসি। বাঁ পায়ের দর্শনীয় এক গোলে দলকে এগিয়ে দেন তিনি। আর সেই গোলের পরেই পাগলের মতো উদ্যাপন করা শুরু করে মাতেও। পিছে ছোট ভাই চিরো মেসিও উদ্দাম উল্লাসে যোগ দেয়। ভিডিওটা দেখে এমন ধারণা হওাটাই স্বাভাবিক, অবশেষে মতি ফিরেছে মাতেওর!
অথচ কিছুদিন আগেও নিয়মিত মাঠে খেলা দেখতে এসে সমর্থকদের মজার সব স্মৃতি উপহার দিত মাতেও। একবার যেমন রিয়াল বেতিসের বিপক্ষে টিভি পর্দায় হাসির রোল ফেলে দিয়েছিল সে। ম্যাচের এক মুহূর্তে ক্যামেরায় ধরা পড়েছিলেন মেসি ও তাঁর দুই ছেলে। সঙ্গে লুইস সুয়ারেজ ও তাঁর পুত্রও ছিলেন। এমন সময় হঠাৎ করে গোল করে বসে বেতিস। সঙ্গে সঙ্গে আনন্দে ফেটে পড়ে মাতেও। উল্লাসে হাততালিও দিতে থাকে। সেটা দেখে সুয়ারেজ পাশ থেকে মৃদু বকুনি দেন। হাসতে হাসতে দেওয়া সে বকুনিতে অবশ্য মজা পাওয়াটাই বোঝা গিয়েছিল। মেসিও ছেলের কাণ্ডে হেসে ফেলেছিলেন। এ ‘কুকর্ম’ আড়াল করার চেষ্টাও করেছিলেন ছেলেকে কাছে টেনে। ধারাভাষ্যকাররাও হেসে ফেলেছিলেন এ কাণ্ডে।
আগে জানা গিয়েছিল, বার্সেলোনাকে হারানো ক্লাবগুলোকে মাতেও সমর্থন করে বাবা ও বড় ভাইকে খোঁচা দিতে। এক সাক্ষাৎকারে মাতেওর এই পাগলামি নিয়ে মুখ খুলেছিলেন মেসি, ‘মাতেও এখনো ফুটবল সম্পর্কে খুব বেশি কিছু বোঝে না। কিন্তু সে ফুটবল ভালোবাসে এবং সব জার্সিই পরে। শেষবার যখন আমরা বাড়িতে ফুটবল খেলছিলাম, “তখন সে আমাকে বলল: আমি লিভারপুল বেছে নেব, যারা তোমাকে হারাল। আমি লিভারপুল। তুমি বার্সেলোনা।” ঠিক যেমন আমরা যখন ভ্যালেন্সিয়ার কাছে হারলাম, তখন সে বলল, ‘ভ্যালেন্সিয়া তোমাকে হারাল! আমি ভ্যালেন্সিয়াকে সমর্থন করি।’
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই বোধটাও হয়তো পরিপক্ব হচ্ছে মাতেওর!